
সাল ১৯৭১। আমার বাবার দুই বড় ভাই আব্দুল জব্বার এবং আব্দুল মান্নান- দুইজনই ঘর থেকে পালিয়ে গেরিলা যুদ্ধে যোগদান করে। যুদ্ধে যাওয়ার আগে জব্বার কাকা, আব্বুকে একটা থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল দিয়ে বলে, মা-বাবা-বোনগুলোকে দেখে রাখিশ। আব্বু, বাড়ির সবাইকে নিরাপদে রাখতে নিয়ে চলে গেল তার দাদাবাড়িতে নেত্রকোনার মোয়াটি গ্রামে।
১৩ জুলাই ১৯৭১, জব্বার কাকার নেতৃত্বে কোম্পানির বিপ্লবী ট্রুপ বিশাল ঠাকুরাকোনা রেলওয়ে ব্রিজ টি গোলাবারুদ দিয়ে উরিয়ে দেয়।সড়ক ও রেলপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে নেত্রকোনা । এলাকার ছেলে বিধায়, পুরা শহরে খুশির রব ছরিয়ে পরে – জব্বার তার বাহিনি নিয়ে এসে ব্রিজ গুড়িয়ে দিয়ে গেসে যেন হানাদারেরা আসতে না পারে। সবার মুখে শুধু জব্বার আর জব্বার।
ঐদিকে গহীন গ্রামে নিরাপদে যে আর ভালো লাগেনা বাবার। আর, চারিদিকে শুধু বড় ভাই জব্বার এর দুঃসাহসিকতার প্রশংসা শুনে সে ভাবে, এহেন কাপুরুষের মত ঘরে বসে কালক্ষেপণের জন্য তার জন্ম হয়নাই, সেও জব্বার ভাই এর মত যুদ্ধে যাবে। কিন্তু,বাবা-মার বাধ্য সন্তান সে, বড় দুই ভাই এর মত পালিয়ে সে যাবেনা। সে অনুমতি নিয়েই যাবে।
অতঃপর, অনেক সাহস সঞ্চয় করে বাবা দুরুদুরু কণ্ঠে বলেঃবাবাঃ “আম্মা, আমিও যুদ্ধে যাইবাম। ইন্ডিয়া জাইবাম মক্তিবাহিনীর ট্রেনিং করতে”দাদীঃ “যা, আমার আরেকটা পোলা যুদ্ধে গেলে দ্যাশটা আরেকটু আগে স্বাধীন হইব। ” অতঃপর, ৪ মুক্তিযোদ্ধার মা হাসনা রহমান, তার কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে এক ব্যাগ চিড়া-মুড়ি দিয়ে রাতে বিদায় দিয়ে দিল, বিদায়-বেলায় ছেলেকে সে বলে :”মতিন, দ্যাশ স্বাধীন কইরা , বাসায় ফিরবি “বাবা কথা রেখেছিল। বিজয় এসেছিল। দাদী, আজ আমাদের সেই বিজয়ের ৪৯ বছর হয়ে গেছে …I wish you were here