আমার চেনা সবচেয়ে সাহসী ব্যক্তি কে ?
উত্তর খুবই সহজ আমার জন্য ।
আমার মেজো কাকা, আব্দুল জব্বার।
আজ ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবস উপলক্ষে জব্বার কাকার বীরত্মের ২ টা গল্প শেয়ার করবঃ
১৯৭১ এর মার্চ মাসের শেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি যখন আমাদের দেশের বাড়ি নেত্রকোনায় আক্রমন করে- তখন অদ্ভুত এক কাজ করে জব্বার কাকা।
সদ্য অনার্স এ ভর্তি হওয়া- কাকা আর তার কয়েক বন্ধু মিলে পাকিস্তানি মিলিটারির অস্ত্রাগার লুট করে । তারপর সেই লুটক্রিত অস্ত্র দিয়ে নেত্রকোনার মুক্তারপাড়া কলেজের মাঠে প্রায় একশ যুবককে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেন আনসার বাহিনীর সহযোগিতায়। নেত্রকোনায় গ্রাসরুট পর্যায়ে শত্রুর মোকাবেলায় একদম প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে ওঠে এর মাধ্যমে।
হ্যাঁ , ঠিক শুনেছেন – মিলিটারির অস্ত্রাগার লুট করেছিল , কয়েকজন নিরস্ত্র যুবক। তারপর, সেই অস্ত্র দিয়েই তাদেরকে প্রতিরোধ করেছিল।
Let that sync in
পরের গল্পটা ১৯৭১ এর জুলাই মাস এর ।
কাকা খেয়াল করেন যে, পাকিস্তানিরা নেত্রকোনা সেক্টর-১১ এ ঢুকার জন্য বারহাট্যা-মহনগঞ্জ এর connecting link ঠাকুরাকোনা ব্রিজ টি ব্যবহার করে তাদের গোলাবারুদ আর সরঞ্জাম সরবরাহ এর জন্য ।
শত্রুপক্ষ যেন সেক্টর-১১ এ ঢুকতে না পারে এজন্য তিনি ঠিক করেন এই ঠাকুরাকোনা ব্রিজ টি ধ্বংস করা জরুরি । ১৩ জুলাই ১৯৭১ এ জব্বার কাকার নেতৃত্বে একটা ছোট বিপ্লবী দল বিশাল ঠাকুরাকোনা রেলওয়ে ব্রিজ টি গোলাবারুদ দিয়ে উরিয়ে দেয়।
বিকট কেপে উঠে অত্র এলাকা। সড়ক ও রেলপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে নেত্রকোনা। এলাকার ছেলে বিধায়, পুরা শহরে খুশির রব ছরিয়ে পরে – জব্বার তার বাহিনি নিয়ে এসে ব্রিজ গুড়িয়ে দিয়ে গেসে যেন হানাদারেরা আসতে না পারে। সবার মুখে শুধু জব্বার আর জব্বার।
জব্বার কাকা আর তার পরিবার- পরিণত হয় নেত্রকোনায় পাকিস্তানি সৈন্য আর রাজাকারদের এক নম্বর টার্গেটে ।
সেই রাতেই বাড়ির সবাই রওনা দেয় অন্যত্র ।
কাওকে না পেয়ে , ক্ষোভবশত, নেত্রকোনা সদরের কলেজরোডে আমাদের ভিটে বাড়ি আগুন দিয়ে পুরিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয় হানাদার বাহিনি।